অনলাইন ডেস্ক : পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে ৬ বছরের ছেলে মেহেদী হাসানকে নিয়ে স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে যান রোকসানা আক্তার। কেউ অপহরণ করেনি বা কারো সঙ্গে পালিয়েও যাননি এই গৃহবধূ।
উদ্ধারের পর পুলিশের কাছে তিনি এমন তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার (১৩ মে) সকালে রামগতি থানার আলী আকবর হাজীর-হাট এলাকা থেকে নিখোঁজ কষান ও ৬ বছরের শিশুপুত্র মেহেদী হাসানকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে গত ১০ মে লক্ষ্মীপুরের রামগতি থানাধীন চর রমিজ ইউনিয়নের চর আফজাল গ্রামের দিনমজুর স্বামী আনোয়ার হোসেনের পাশ থেকে নিখোঁজ হন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রোকসানা আক্তার ও তাদের ৬ বছরের শিশু পুত্র মেহেদী হাসান।
এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এমন রহস্যজনক ঘটনায় সময় নিউজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমেও খবর প্রচারিত হয়।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, গত ১০ মে মঙ্গলবার রাতে রামগতি উপজেলার চর রমিজ ইউনিয়নের চর আফজাল গ্রামের দিনমজুর আনোয়ার হোসেন ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রোকসানা রাতের খাবার শেষে তাদের ৬ বছরের শিশুপুত্র মেহেদী হাসানকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে তাদের প্রতিবেশী আনোয়ারের বড় ভাইয়ের স্ত্রী মারজাহান বেগম ঘুম থেকে উঠে আনোয়ারদের ঘরের দরজা খোলা দেখতে পান। তখন তিনি এগিয়ে গিয়ে দেখেন ঘরের মেঝেতে ছড়ানো ছিটানো প্রচুর রক্ত পড়ে আছে।
এই দেখে তিনি চিৎকার দিয়ে বাড়ির অন্যদের ডাকেন। তারা এসে আনোয়ারকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পান। কিন্তু তার স্ত্রী রোকসানা বা সন্তান মেহেদীকে বিছানায় বা আশপাশে কোথাও পাওয়া যায়নি। তারা আনোয়ারকে ঘুম থেকে উঠিয়ে তার স্ত্রী ও সন্তানের কথা জিজ্ঞেস করলে সে কিছুই বলতে পারেনি। এদিকে আশপাশের লোকজন ঘরে এসে মেঝেতে রক্ত ছড়ানো ছিটানো দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়।
এদিকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আলামত সংগ্রহ করে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী, প্রতিবেশী ও গৃহবধূর বাবা—মাসহ ৭ জনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। ১২ মে বৃহস্পতিবার স্বামী আনোয়ার হোসেনকে আটক রেখে বাকিদের ছেড়ে দেয় পুলিশ।
এ ঘটনায় রামগতি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন রোকসানার পিতা ননা মিয়া। পরে পুলিশ নোয়াখালী, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে আজ সকালে রামগতি থানার আলী আকবর হাজীরহাট এলাকার রোকসানার এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে রোকসানা ও তার শিশুপুত্রকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এদিকে এলাকাবাসী জানিয়েছে, আনোয়ার হাবাগোবা নিরীহ প্রকৃতির লোক। সে বিভিন্ন জায়গায় মাটি কেটে ও দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করে। তবে স্ত্রীর সঙ্গে তার বনিবনা হয় না। তারা প্রায়ই ঝগড়াঝাঁটি করতো। ইতোপূর্বেও তার স্ত্রী বেশ কয়েকবার চলে গিয়েছিল। এ নিয়ে এলাকায় সালিশ দরবারও হয়েছে কয়েকবার। এভাবে আত্মগোপনে গিয়ে আত্মীয় স্বজন, এলাকাবাসী ও প্রশাসনকে হয়রানির জন্য আনোয়ারের স্ত্রী রোকসানা আক্তারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তারা।
মতিহার বার্তা / এম টি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.